তারিখঃ২৭/০২/২০২০ ইং
আনসার রোডের বাসায় উঠেছিলাম সেই ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে । বাসন সড়কের বাসায় প্রায় চার বছর কাটিয়ে আনসার রোডে এসেছিলাম । রুমমেট মানিকদা সহ এক সাথে উঠেছিলাম ২০১৩ সালের ১লা জানুয়ারী । আমি লুজিন কোম্পানীতে জয়েন করেছিলাম ২০১২ সালের ২৭শে আগস্ট । তার পর মানিকদা সহ এক সাথে বাসা নিয়েছিলাম । আমাকে ট্রান্সফার করেছিল টঙ্গীতে,মানিকদাকে মাওনায় । আমাদের বাসা তারপরেও বাসন সড়কেই ছিল । এর পর আমাকে ট্রান্সফার করে মাওনায় । পরে মাওনার আনসার রোডে বাসা নিয়েছিলাম । তার বিয়ে হয়ে গেল এ মাসের ১০ তারিখে ,তাই সে বাসা নিল অন্য খানে স্ত্রীর সাথে । আমিও বাসা ছেড়ে দিয়ে বাসা নিয়েছি অন্য খানে । আগামীকাল নতুন বাসায় চলে যাব । আজকের রাতটাই এ বাসায় শেষ রাত ।
আজ মানিকদা সব কিছু তার নিয়ে গেল । রয়ে গেলাম আমি । খালা সেই প্রথম থেকেই রান্না করে খাওয়াচ্ছেন । তার মনটা বড্ড খারাপ । খালাকে আমার অনেক পুরনো শার্ট,প্যান্ট দিয়ে দিয়েছি । সেগুলো দিয়ে নাকি উনি ডেকচি পাতিল কিনবেন । থালা,বাটি,বটি,চাল রাখার ড্রাম সব কিছুই খালাকে দিয়ে দিলাম । আমাদের কাছে খালা ছিল খুবই বিশ্বাসী । আমরা বাসার সব কিছুই ছেড়ে দিতাম তার হাতে । আজ যখন এ বাসা ছাড়ার সময় এলো ,তখন অনেক খারাপ লাগছে । এ তিন বছরে মায়ের হাতের রান্না ক দিনই বা খেয়েছি । বছরে বাড়িতে যাওয়া হয় বছরে দুই বার বা তিন বার ,সেটাও মাত্র কয়েক দিনের জন্য । তাই এখন আর মায়ের হাতের রান্না বেশি খাওয়াই হয় না । সারা বছরই খেতে হয় খালার হাতের রান্না ।
এ তিন বছরে যে ভাবে বাজার করেছি ,সে আইটেম দিয়ে খেতে চেয়েছি ,খালা না করেনি । তার কাছে অনেক আবদার করেছি বিভিন্ন্ আইটেম রান্না করার জন্য । খালা বলেছে ,নতুন বাসায় খাওয়ার সমস্যা হলে জানাতে । উনি ভাত রান্না করে আমার বাসায় পৌঁছে দিতে চায় । খালাকে বলেছিলাম,সমস্যা হলে জানাব । দুই তিন মাস থেকে আমাদের অফিসের রান্নার ভার দিয়েছি খালাকে । মাসে দেওয়া হত পাঁচ হাজার টাকা । আমি যখন বাসা ছাড়লাম ,সে রান্নাটাও বন্ধ হয়ে গেল । খালার ইনকাম এর উৎস টা বন্ধ হয়ে গেল । আমি অফিসে বলেছিলাম,খালার বাসায় রান্না জন্য । কেউ রাজি হল না । আমি আর কিছুই করতে পারলাম না । ওদিকে এস কে নামের পাশের একটা কোম্পানী বন্ধ হয়ে গেল । সেখানে কয়েক জনের রান্না করতো খালা । সেটাও বন্ধ হয়ে গেল । খালা েজন্য খুবই খারাপ লাগছে কিন্তু আমার করার কিছুই নেই । অফিসে বলে রেখেছি ,যদি বুয়ার দরকার হয় ,সম্ভব হলে খালাকে যেন একটা জব দেয় ।
আমি একাকী এটা সেটা গোছাতে থাকি । আগামীকাল দশটার দিকে নতুন বাসায় যাব । ব্যাচলর থাকি,তারপরেও এটা সেটা কত কিছুই রয়েছে । যা পারছি গোছাতে থাকি । আজ সময়টা যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে । কত কথাই এলোমেলো ভাবে মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে । মনের অজান্তেই মনটা যেন বিষাদে ভরে যাচ্ছে । এত দিন যে বাসাটায় ছিলাম, ব্যাচলরদের জন্য খুবই ভাল ছিল । চারিদিকে খোলামেলা জায়গা । সামনে পিছনে খোলা মাঠ । মেইন রোড কাছেই । কত না পুরনো স্মৃতি আজ ভেসে উঠে চোখের পাতায় । কত শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছি ,কত রাত জেগেছি ,কত স্বপ্ন দেখেছি এই বাসায় । জীবনের কত সময় কেটে গেল নিমিষেই । আজ রাতটার পর আর আসা হবে না এখানে । আজ রাতটাই এ বাসায় শেষ রাত ।
দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরতাম । এসেই খালাকে বলতাম ,আজকের রেসিপি কি খালা । খালার বাড়ি নেত্রকোনায় । বেশির ভাগ সময়েই উনি কথা বলেন নেত্রকোনার ভাষায় । মাঝে মাঝে আমি তাল মিলাতাম তার সাথে । আমার কথা শুনে রুমমেট মানকিদা খুব হাসতো । সকাল বেলা খালার সাথে দেখা হলেই বলতাম, ভালো আছুইন খালা ? সে ভাবে আর কখনো বলা হবে না কোন দিন । পাশের একজন ভাবি প্রায় সময়ই ভাল কিছু আয়োজন করলে আমাদের জন্য পাঠিয়ে দিতো । সেই ভাবির হাতের সেই খাবার গুলোকে বড়ই মিস করব ।
এই বাসায় আমি বেশ কয়েক বার করলা চাষ করেছিলাম । আশে পাশের লোক জন করলা গাছ আর করলার ফলন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল । ভাল লাগে এসব চাষাবাদ করতে । আর কখনো এই বাসায় করলা চাষ করতে পারব না । বর্ষার দিনে বিশেষ করে ছুটির দিনে বৃষ্টির সময় সামনের মাঠটাতে ভিজতাম । এমন খোলামেলা জায়গায় বৃষ্টিতে ভিজতে বড়ই ভাল লাগতো । কখনো এমন করে আর বৃষ্টিতে ভিজতে পারব না এই চির চেনা মাঠটাতে ।
খালা রাতে মুরগীর মাংস রান্না করে নিয়ে এলো । এটাই খালার হাতের শেষ মুরগীর মাংস রান্না । মানিকদা তার টিভি নিয়ে গেছে আজ । তাই ভাত খেয়ে বিছানায় শুয়ে আগামীকালের জন্য প্লান করতে লাগলাম । অফিসের লোডার কাশি কান্তকে বলেছিলাম আগামীকাল আসার জন্য । সে হয়তো সাথে করে দুই তিন কে নিয়ে আসবে । ভ্যান ভাড়া করি নি ,তাদেরই কিছু টাকা দিয়ে দেব । আগামীকাল শুক্রবার,অফিস বন্ধ, টাকাটা হয়তো ওদেরও কিছুটা কাজে লাগবে ।
আমাদের ধর্মীয় শাস্ত্রে পড়েছিলাম জন্মান্তর বাদ নিয়ে । মানুষের মৃত্যুটা নাকি পুরাতন বস্ত্র ছেড়ে নতুন বস্ত্র পরিধানের মত । আত্মা দেহ ছেড়ে চলে যায় । পুরনো দেহ পড়ে থাকে ,নতুন দেহকে আশ্রয় করে আত্মা নতুন ভাবে জীবন চক্র শুরু করে । আজ আমার সেই কথাটিই বার বার মনে হচ্ছে । এই পুরনো বাসা ছেড়ে নতুন বাসায় চলে যাব । পড়ে রবে এই পুরাতন বাসাটি ।
মন কে শান্তনা দিচ্ছি ,এত মন খারাপ করে কি আর হবে । পৃথিবীতে কেউ চির স্থায়ী নয় । সবাই যে যার আপন পথে ছুটছে । পিছনে তাকাবার সময় কারো নেই । আমাদের নিরন্তর ছুটে চলতে হয় ,তাই আমরা ছুটে চলি সম্মুখ পানে । মনেক বার বার বোঝাই । মন শান্ত হয় । তারপরেও আচমকা মনের গভীরে একটা বেদনার ছাপ ছেয়ে ধরে । রবি ঠাকুরের একটা গল্পে পড়েছিলাম, জীবনে কত বিরহ মিলন রয়েছে । তাই এত ভেবে আর কি হবে ।
অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে ভাবনা গুলো যেন দুরে সরে যেতে লাগলো । আমি শুয়ে শুয়ে আগামীকালের জন্য ভাবতে লাগলাম । নতুন বাসায় গিয়ে কেমন থাকব, দু’চারদিন কিমন লাগবে । কোথায় খাব । কেমন হবে পরের জীবন । ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবতে ভাবতে আনেক রাত হয়ে গেল । আজ যেন চোখে ঘুম আসতেই চাচ্ছে না । সময়টা যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে । সময় চলে যায় । তারিখ বদলে যায় । বদলে যায় মানুষের জীবন । আমরা আশায় বুক বেঁধে,নতুন স্বপ্ন দেখতে দেখতে দিন পাড় করে দেই । আমি ভাবছি নতুন বাসায় গিয়ে জীবনটাকে নতুন করে সাজাব । জীবনে হয়তো নতুন কিছু আপেক্ষা করছে আমার জন্য । পুরনো বাসার কিছু পুরনো অভ্যাস ত্যাগ করে নতুন জীবনের জন্য নতুন করে কিছু করতে হবে । নতুন বাসায় গিয়ে এটাই আমি চাইব । আজ রাতটা এ বাসায় শেষ রাত । প্রথম যেদিন এ বাসায় উঠেছিলাম ,সেদিনও তেমন ঘুম হয় নি । আজো হয়তো হবে না । তবুও সময় চলে যায় তার নিজের নিয়মে ।
আনসার রোডের বাসায় উঠেছিলাম সেই ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে । বাসন সড়কের বাসায় প্রায় চার বছর কাটিয়ে আনসার রোডে এসেছিলাম । রুমমেট মানিকদা সহ এক সাথে উঠেছিলাম ২০১৩ সালের ১লা জানুয়ারী । আমি লুজিন কোম্পানীতে জয়েন করেছিলাম ২০১২ সালের ২৭শে আগস্ট । তার পর মানিকদা সহ এক সাথে বাসা নিয়েছিলাম । আমাকে ট্রান্সফার করেছিল টঙ্গীতে,মানিকদাকে মাওনায় । আমাদের বাসা তারপরেও বাসন সড়কেই ছিল । এর পর আমাকে ট্রান্সফার করে মাওনায় । পরে মাওনার আনসার রোডে বাসা নিয়েছিলাম । তার বিয়ে হয়ে গেল এ মাসের ১০ তারিখে ,তাই সে বাসা নিল অন্য খানে স্ত্রীর সাথে । আমিও বাসা ছেড়ে দিয়ে বাসা নিয়েছি অন্য খানে । আগামীকাল নতুন বাসায় চলে যাব । আজকের রাতটাই এ বাসায় শেষ রাত ।
আজ মানিকদা সব কিছু তার নিয়ে গেল । রয়ে গেলাম আমি । খালা সেই প্রথম থেকেই রান্না করে খাওয়াচ্ছেন । তার মনটা বড্ড খারাপ । খালাকে আমার অনেক পুরনো শার্ট,প্যান্ট দিয়ে দিয়েছি । সেগুলো দিয়ে নাকি উনি ডেকচি পাতিল কিনবেন । থালা,বাটি,বটি,চাল রাখার ড্রাম সব কিছুই খালাকে দিয়ে দিলাম । আমাদের কাছে খালা ছিল খুবই বিশ্বাসী । আমরা বাসার সব কিছুই ছেড়ে দিতাম তার হাতে । আজ যখন এ বাসা ছাড়ার সময় এলো ,তখন অনেক খারাপ লাগছে । এ তিন বছরে মায়ের হাতের রান্না ক দিনই বা খেয়েছি । বছরে বাড়িতে যাওয়া হয় বছরে দুই বার বা তিন বার ,সেটাও মাত্র কয়েক দিনের জন্য । তাই এখন আর মায়ের হাতের রান্না বেশি খাওয়াই হয় না । সারা বছরই খেতে হয় খালার হাতের রান্না ।
এ তিন বছরে যে ভাবে বাজার করেছি ,সে আইটেম দিয়ে খেতে চেয়েছি ,খালা না করেনি । তার কাছে অনেক আবদার করেছি বিভিন্ন্ আইটেম রান্না করার জন্য । খালা বলেছে ,নতুন বাসায় খাওয়ার সমস্যা হলে জানাতে । উনি ভাত রান্না করে আমার বাসায় পৌঁছে দিতে চায় । খালাকে বলেছিলাম,সমস্যা হলে জানাব । দুই তিন মাস থেকে আমাদের অফিসের রান্নার ভার দিয়েছি খালাকে । মাসে দেওয়া হত পাঁচ হাজার টাকা । আমি যখন বাসা ছাড়লাম ,সে রান্নাটাও বন্ধ হয়ে গেল । খালার ইনকাম এর উৎস টা বন্ধ হয়ে গেল । আমি অফিসে বলেছিলাম,খালার বাসায় রান্না জন্য । কেউ রাজি হল না । আমি আর কিছুই করতে পারলাম না । ওদিকে এস কে নামের পাশের একটা কোম্পানী বন্ধ হয়ে গেল । সেখানে কয়েক জনের রান্না করতো খালা । সেটাও বন্ধ হয়ে গেল । খালা েজন্য খুবই খারাপ লাগছে কিন্তু আমার করার কিছুই নেই । অফিসে বলে রেখেছি ,যদি বুয়ার দরকার হয় ,সম্ভব হলে খালাকে যেন একটা জব দেয় ।
আমি একাকী এটা সেটা গোছাতে থাকি । আগামীকাল দশটার দিকে নতুন বাসায় যাব । ব্যাচলর থাকি,তারপরেও এটা সেটা কত কিছুই রয়েছে । যা পারছি গোছাতে থাকি । আজ সময়টা যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে । কত কথাই এলোমেলো ভাবে মনের মাঝে উঁকি দিচ্ছে । মনের অজান্তেই মনটা যেন বিষাদে ভরে যাচ্ছে । এত দিন যে বাসাটায় ছিলাম, ব্যাচলরদের জন্য খুবই ভাল ছিল । চারিদিকে খোলামেলা জায়গা । সামনে পিছনে খোলা মাঠ । মেইন রোড কাছেই । কত না পুরনো স্মৃতি আজ ভেসে উঠে চোখের পাতায় । কত শান্তির ঘুম ঘুমিয়েছি ,কত রাত জেগেছি ,কত স্বপ্ন দেখেছি এই বাসায় । জীবনের কত সময় কেটে গেল নিমিষেই । আজ রাতটার পর আর আসা হবে না এখানে । আজ রাতটাই এ বাসায় শেষ রাত ।
দিন শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরতাম । এসেই খালাকে বলতাম ,আজকের রেসিপি কি খালা । খালার বাড়ি নেত্রকোনায় । বেশির ভাগ সময়েই উনি কথা বলেন নেত্রকোনার ভাষায় । মাঝে মাঝে আমি তাল মিলাতাম তার সাথে । আমার কথা শুনে রুমমেট মানকিদা খুব হাসতো । সকাল বেলা খালার সাথে দেখা হলেই বলতাম, ভালো আছুইন খালা ? সে ভাবে আর কখনো বলা হবে না কোন দিন । পাশের একজন ভাবি প্রায় সময়ই ভাল কিছু আয়োজন করলে আমাদের জন্য পাঠিয়ে দিতো । সেই ভাবির হাতের সেই খাবার গুলোকে বড়ই মিস করব ।
এই বাসায় আমি বেশ কয়েক বার করলা চাষ করেছিলাম । আশে পাশের লোক জন করলা গাছ আর করলার ফলন দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল । ভাল লাগে এসব চাষাবাদ করতে । আর কখনো এই বাসায় করলা চাষ করতে পারব না । বর্ষার দিনে বিশেষ করে ছুটির দিনে বৃষ্টির সময় সামনের মাঠটাতে ভিজতাম । এমন খোলামেলা জায়গায় বৃষ্টিতে ভিজতে বড়ই ভাল লাগতো । কখনো এমন করে আর বৃষ্টিতে ভিজতে পারব না এই চির চেনা মাঠটাতে ।
খালা রাতে মুরগীর মাংস রান্না করে নিয়ে এলো । এটাই খালার হাতের শেষ মুরগীর মাংস রান্না । মানিকদা তার টিভি নিয়ে গেছে আজ । তাই ভাত খেয়ে বিছানায় শুয়ে আগামীকালের জন্য প্লান করতে লাগলাম । অফিসের লোডার কাশি কান্তকে বলেছিলাম আগামীকাল আসার জন্য । সে হয়তো সাথে করে দুই তিন কে নিয়ে আসবে । ভ্যান ভাড়া করি নি ,তাদেরই কিছু টাকা দিয়ে দেব । আগামীকাল শুক্রবার,অফিস বন্ধ, টাকাটা হয়তো ওদেরও কিছুটা কাজে লাগবে ।
আমাদের ধর্মীয় শাস্ত্রে পড়েছিলাম জন্মান্তর বাদ নিয়ে । মানুষের মৃত্যুটা নাকি পুরাতন বস্ত্র ছেড়ে নতুন বস্ত্র পরিধানের মত । আত্মা দেহ ছেড়ে চলে যায় । পুরনো দেহ পড়ে থাকে ,নতুন দেহকে আশ্রয় করে আত্মা নতুন ভাবে জীবন চক্র শুরু করে । আজ আমার সেই কথাটিই বার বার মনে হচ্ছে । এই পুরনো বাসা ছেড়ে নতুন বাসায় চলে যাব । পড়ে রবে এই পুরাতন বাসাটি ।
মন কে শান্তনা দিচ্ছি ,এত মন খারাপ করে কি আর হবে । পৃথিবীতে কেউ চির স্থায়ী নয় । সবাই যে যার আপন পথে ছুটছে । পিছনে তাকাবার সময় কারো নেই । আমাদের নিরন্তর ছুটে চলতে হয় ,তাই আমরা ছুটে চলি সম্মুখ পানে । মনেক বার বার বোঝাই । মন শান্ত হয় । তারপরেও আচমকা মনের গভীরে একটা বেদনার ছাপ ছেয়ে ধরে । রবি ঠাকুরের একটা গল্পে পড়েছিলাম, জীবনে কত বিরহ মিলন রয়েছে । তাই এত ভেবে আর কি হবে ।
অনেক কিছু ভাবতে ভাবতে ভাবনা গুলো যেন দুরে সরে যেতে লাগলো । আমি শুয়ে শুয়ে আগামীকালের জন্য ভাবতে লাগলাম । নতুন বাসায় গিয়ে কেমন থাকব, দু’চারদিন কিমন লাগবে । কোথায় খাব । কেমন হবে পরের জীবন । ভবিষ্যতের ভাবনা ভাবতে ভাবতে আনেক রাত হয়ে গেল । আজ যেন চোখে ঘুম আসতেই চাচ্ছে না । সময়টা যেন দ্রুত চলে যাচ্ছে । সময় চলে যায় । তারিখ বদলে যায় । বদলে যায় মানুষের জীবন । আমরা আশায় বুক বেঁধে,নতুন স্বপ্ন দেখতে দেখতে দিন পাড় করে দেই । আমি ভাবছি নতুন বাসায় গিয়ে জীবনটাকে নতুন করে সাজাব । জীবনে হয়তো নতুন কিছু আপেক্ষা করছে আমার জন্য । পুরনো বাসার কিছু পুরনো অভ্যাস ত্যাগ করে নতুন জীবনের জন্য নতুন করে কিছু করতে হবে । নতুন বাসায় গিয়ে এটাই আমি চাইব । আজ রাতটা এ বাসায় শেষ রাত । প্রথম যেদিন এ বাসায় উঠেছিলাম ,সেদিনও তেমন ঘুম হয় নি । আজো হয়তো হবে না । তবুও সময় চলে যায় তার নিজের নিয়মে ।

0 Comments