পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখী, কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি, গুঞ্জরিয়া আসে অলি কুঞ্জে কুঞ্জে ধেয়ে তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।’ দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের কবিতার এ চরণগুলো মনে হলে কার না ইচ্ছে হয় ফুলের বাগান করার। কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে কী আর এখন ফুলের বাগান করা সম্ভব। জায়গার যে বড়ই অভাব। হয়তো তখন অনেকের স্মৃতিতে ভেসে ওঠবে শৈশবের কথা। মফস্বল শহর ১০ থেকে ১৫ কাঠা জায়গার মাঝখানে একতলা টিনের ঘর নয়তো একতলা দালান। এরই সম্মুখে ফুলের বাগান। এমনি জায়গা থাকলে আপনিও করতে পারেন ফুলের বাগান, শুধু তাই না বাড়ির ছাদেও করা যাবে নানান রকমের ফুলের চাষ। জুঁই, চামেলী, রজনীগন্ধা, গোলাপ, কামিনী, জবা, বেলী, কেতকী কত না ফুলের গাছ। যিনি একটু সৌখিন তিনি এখনো মফস্বল শহরে বাড়ির সামনে নয়তো নগরীতে নিজ বাসার সামনে অথবা ছাদে টবে দু’চারটি গোলাপ, ২টি কামিনী, ১টি বেলী, ১ টি রজনীগন্ধা কিংবা অন্যান্য পছন্দের ফুলের গাছ লাগান।
গাছপালার পত্রপল্লবে গুচ্ছ গুচ্ছ অন্ধকার ফিকে হয়ে আসতেই পাখপাখালির দল মহাকলরবে ডানা মেলে উড়ে যায় নীল আকাশে। আকাশের উজ্জ্বল নীলিমার প্রান্ত ছুঁয়ে মালার মত উড়ে যায় পাখির ঝাঁক। শিমুল তুলোর মতো ভেসে চলে সাদা মেঘের খেয়া। চারদিকে সজীব গাছপালার ওপর বয়ে যায় শেফালিফুলের মদির গন্ধভরা ফুরফুরে মিষ্টি হাওয়া। শিউলি তলায় হালকা শিশিরে ভেজা দুর্বাঘাসের ওপর চাদরের মত বিছিয়ে থাকে সাদা আর জাফরন রং মেশানো রাশি রাশি শিউলিফুল। শরতের ভোরের এই সুরভিত বাতাস মনে জাগায় আনন্দের বন্যা। তাই খুব ভোরে কিশোর কিশোরীরা ছুটে যায় শিউলি তলায়। সূর্য ওঠে সোনার আলোয়। নির্মল আলোয় ভরে যায় চারদিক। আমন ধানের সবুজ চারার ওপর ঢেউ খেলে যায় উদাসী হাওয়া। আদিগন্ত সবুজের সমারোহ। ফসলের মাঠের একপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীর রুপালি ধারায় সূর্যের আলো ঝলমল করে। ভরা নদীর বুকে পাল তুলে মালবোঝাই নৌকা চলে যায়। ডিঙি নাও বাইতে বাইতে কোনো মাঝি হয়তোবা গেয়ে ওঠে ভাটিয়ালি গান। পুকুরপাড়ে আমগাছের ডালে মাছরাঙা ধ্যান করে। স্বচ্ছ জলে পুঁটি, চান্দা বা খলসে মাছের রূপালি শরীর ভেসে উঠলে সে ছোঁ মেরে তুলে নেবে তার লম্বা ঠোঁটে। নদীর চরে চখাচখি, ,পানকৌড়ি, বালিহাঁস বা খঞ্জনা পাখির ডাক। কলসি কাঁকে মেঠো পথে হেঁটে চলে গাঁয়ের বধূ। ফসলের খেতে অমিত সম্ভাবনা কৃষকের চোখে স্বপ্নে ছাওয়া সবুজ ধানখেতটা একবার চেয়ে দেখে কৃষক। বিলের জলে নক্ষত্রের মতো ফুটে থাকে সাদা ও লাল শাপলা। সকালের হালকা কুয়াশায় সেই শাপলা এক স্বপ্নিল দৃশ্যের আভাস আনে। আলো চিকচিক বিলের জলে ফুটে ওঠে প্রকৃতির অপর লীলা।








0 Comments