Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

পূজার কেনা কাটা, ২০১৮

                                           
দুর্গাপূজা এসে গেল । মহালয়া হ‌য়ে গে‌ছে । ১৪ তা‌রি‌খে মহা প্ঞ্চমীর মধ্য দি‌য়ে পূজার কার্যক্রম শুরু হ‌বে ।
পুজা উপল‌ক্ষে অনেক বছর থে‌কে নি‌জের জন্য  কেনা কাটা ক‌রি না । সব শেষ ক‌বে কি‌নে‌ছি ম‌নে নেই । বা‌ড়ি‌তে কিছু টাকা পা‌ঠি‌য়ে‌ছি ,মা ,ভা‌তিজা ,ভা‌তি‌জির জন্য । ২০১৮ সালটা আমার ভাল কাট‌ছে না । নতুন বছর না আসা পর্যন্ত ম‌নে হয় আমার অভাব যা‌বে না ।

রুম‌মেট মা‌নিকদার সা‌থে জয়‌দেব পু‌রে গেলাম । রুম‌মেট একুশ হাজার টাকা দি‌য়ে একটা মোবাইল সেট কিন‌লো ।  প‌রে স‌জীব দা সহ তিন জন মি‌লে ফ্রান্স ফ্রাই আর থাই সুপ খেলাম ।
রা‌তে বা‌ড়ি‌তে কল দিলাম । সু‌প্রিয় জানাল ,আজ তারা কেনাকাটা ক‌রে‌ছে । স‌তের শ টাকা দি‌য়ে পা‌য়েল একটা জামা কি‌নে‌ছে । সু‌প্রিয় আঠা‌রো উনিশ শ টাকা দি‌য়ে শার্ট আর প্যান্ট কি‌নে‌ছে । মা‌য়ের জন্য শা‌ড়ি ,ব্লাউজ ,‌বৌ‌দির জন্য শা‌ড়ি কেনা হ‌য়ে‌ছে । দাদা কিছু কি‌নে‌ নি ।
শুধু দু ভাই‌য়েরটা বা‌কি থাকল ।
সু‌প্রিয় বলল , পা‌য়েলই সব চে‌য়ে দাম দি‌য়ে কেনা কাটা করল ।



বললাম, তু‌মি যা দাম দি‌য়ে আজ শার্ট প্যান্ট কি‌নে‌ছো ,আ‌মি কি‌নি তার অর্ধেক দাম দি‌য়ে ।
সুপ্রিয় বলল ,কাকাু যারা নিয়‌মিত অফি‌সে যায় ,তা‌দের প্যান্ট শার্ট বে‌শি প্র‌য়োজন হয় । তাই তা‌দের সংখ্যা বাড়া‌তে হ‌বে । আমি গত বছর যে শার্ট প্যান্ট কি‌নেছিলাম , বছ‌রে ম‌নে হয় চার পাঁচ বার প‌রে‌ছি কাকু । সু‌প্রিয়র কথা শু‌নে আমি অবাক হ‌য়ে গেলাম ।
গত বছর পুজায় পা‌য়ে‌লের সা‌থে ঘু‌রে‌ছিলাম । এবা‌রেও সে আশা নি‌য়ে ব‌সে আছে । পা‌শের বা‌ড়ির বাচ্চা‌দের না‌কি ব‌লে‌ছে , কাকু আস‌লে কাকুর সা‌থে পুজা দেখ‌তে যাব ।
ক‌য়েক দিন আ‌গে পা‌য়েল ব‌লে‌ছিল ,কাক‌ু কোন কিছু কিনব না ,তু‌মি শুধু বা‌ড়িতে আসো । তু‌মি না
আস‌লে মন খারাপ করব কাকু ।
এবার পুজায় বা‌ড়িতে যাব না ।
খারাপ লাগ‌ছে , পা‌য়ে‌লের আশা পুরন কর‌তে পারব না । সবার কেনা কাটা হ‌য়ে‌ছে শু‌নে খুব ভাল লাগল । সব আশাই তো আর পুরন হয় না ,‌কিছু অপুরনও থে‌কে যায় । 
ছোট বেলা থেকেই পুজা উপলক্ষ্যে তেমন কেনা কাটা করতাম না । যতদূর মনে পড়ে ,পুজার সময় তেমন কিছু কিনি নি । মেস  ২০০১ সালে ইন্টারমিডিয়েড এ মেসে উঠে ছিলাম । তখন থেকেই মুলত সংগ্রামী জীবন শুরু । এ যাবৎ সংগ্রাম চলছে তো চলছেই । মৌলিক চাহিদা গুলো পুরণ করতে করতেই নাজেহাল অবস্থা । বাড়ির সদস্যদের চাহিদা পুরন করার কথা ভাবলে তখন আর নিজের কথা ভাববার সময় হয় না । বাড়িতে ছোট দুই জন ভাতিজা আর ভাতিজি । ওদের মুখে হাসি দেখলে আর কিছু্‌ই বাকি থাকে না । 
এবার ভেবেছি শ্রীপুরেই পুজা করব । বাড়িতে যাব না । সাড়া জীবন তো বাড়িতেই পুজা করি । বাইরের পুজা দেখারও দরকার রয়েছে । যদিও সবাই চায় বাড়ির সকল সদস্যকে নিয়ে পুজায় আনন্দ করতে  । খারাপ লাগছে ,বাড়িতে যাব না । ভাতিজি পায়েল বার বার বলছে বাড়িতে যেতে । ছোট মানুষ । হয়তো ভেবেছে,কাকু বাড়িতে এলে এক সাথে ঠাকুর দেখতে যাব । কাকুর সাথে ঠাকুর দেখতে গেলে কতই না আনন্দ । ২০১৭ সালে আমি আর পায়েল পুজায় খুবই ঘোরাঘুরি করেছিলাম । সে তখন ওয়ানে পড়তো । খুবই ছোট ছিল সে । শিমুল তলী থেকে সংগঠন এ,সেখান থেকে ঢেপির পাড় হেঁটেই গিয়েছিলাম । আসার সময় ভ্যানে করে শিমুলতলী র ঘাটে এসেছিলাম । এরপর নিমোজ খানায় গিয়েছিলাম । খুবই আনন্দ করেছিল সে । সেই আনন্দ টুকু থেকে এবার সে বঞ্চিত হবে সে । ভাবতেই খারাপ লাগছে । 
পুজার সময় কেউ কেউ নাকি অনেক কেনা কাটা করে । কিন্তু আমার কথা হল,এত কেনাকাটা নিজের জন্য না করে সামর্থ অনুযায়ী তো আমরা কিছু গরীব লোকদের দান করতে পারি । বেশির ভাগ লোক শুধু নিজের কথা ভাবে । পরের কথা কজনেই বা ভাবে । এইযে পুজায় চার পাঁচ দিনের জন্য কত টাকা খরচ করি কিন্তু পরেরর জন্য কিছুই তো করি না । আমরা কি পারি না অন্যের জন্য কিছু করতে । পরের মুখে হাসি ফোটানোর মত বড় কাজ আর কি হতে পারে ।


 

আমি তো দেখি পুজার বড় বড় প্যান্ডেলে অনেক টাকা খরচ হয় ,অথচ প্রসাদ পর্যন্তও ভাল ভাবে বিতরণ হয় না । কাঙ্গালী ভোজন করানো হয় না । বস্ত্র বিতরণের কথা নাই বা বললাম । আমি যে সব কথা বলছি অনেকের কাছে তা ভাল নাও লাগতে পারে । তবে আমি তাদের এতটুকুই বলব, আমি যেসব কথা বললাম,একটু মনদিয়ে ভেবে দেখুন ঠিক আছে কিনা । পুজায় নিজের সন্তানের জন্য ডজন ডজন পোশাক না কিনে সেখান থেকে একটি যদি গরীব দুঃখিদের জন্য কেনা হয় ,তাহলে আনন্দ বাড়বে বই কমবে না । 

Post a Comment

0 Comments