Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Sharodiya Durga Puja-2018




 ছোট বেলায় যে ভাবে পূজা করেছিলাম সময়ের প্রেক্ষিতে সব কিছু যেন বদলে গেছে । ছোট বেলায় পূজা আসছে এটাই আমাদের মনে আনন্দ নিয়ে আসতো । ছোট ছোট কেনা কাটা,পুজার আনন্দ আমাদের অনেক গুন বাড়িয়ে দিতো । আমাদের শয়নে স্বপনে থাকতো পূজার কথা । যতই বড় হতে লাগলাম ততই আনন্দ যেন বদলে যেতে লাগলো । আর এখন তো পূজায় বাড়িতেই যাওয়া হয় না ।


 

এ বছর বাড়িতে যাব না । বাড়ির সবাই বাড়িতে যেতে বলছে । প্রাইভেট জব করি, তার উপর পূজার কোন ছুটি নেই । যদিও হিন্দু মালিক ,তারপরেও হিন্দুদের ধর্মীয় কোন উৎসবের ছুটি নেই । এবার ভেবেছি পূজাটা শ্রীপুরেই করব । পায়েল বার বার বলছে কাকু বাড়িতে আসো ,এক সাথে ঘুরব । এবার ইচ্ছে আছে পূজা এদিকেই করব । মন চায় বাড়িতে যাই কিন্তু কখনো কখনো ভাবি ,সাড়া জীবন তো বাড়িতেই পূজা করি ,এবার না হয় এদিকেই পূজা দেখব । 
এদিকে থাকলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা হবে না,আত্মীয়দের সাথে দেখা হবে না । কিন্তু এদিকের পূজাটা দেখা হবে । তাছাড়া পারিবারিক কারণেও এবার এদিকে থাকব পূজায় । তাই ডিসিশন ফাইনাল,এবারের পূজায় এদিকেই থাকছি । বাইরের পুজা যদিও এলাকার পুজার মত হবে না তবুও এবার এদিকেই থাকব । এলাকায় জাঁক জমক কম হলেও আনন্দ বেশি । সেখানে আত্মীয় স্বজন,বন্ধু বান্ধব সবার সা্থে দেখা হয় ,কথা হয়,দিন রাত আড্ডা চলে । সবাই মিলে এক সাথে আড্ডা দেওয়ার মজাটাই অন্য রকম । এবার পুজায় আমি সেই সব আ্ড্ডা ,দেখা সাক্ষাৎ থেকে বঞ্চিত হব । সবার সাথে দেখা হবে না । বাড়ির ভাল মন্দ খাবার থেকে বঞ্চিত হব  । ভাতিজা ভাতিজির সাথে ঘোরাঘুরি করতে পারব না । এবার সব কিছুকেই মিস করব । তারপরেও এবার ইচ্ছে প্রকাশ করেছি শ্রীপুরেই পুজা করব । অনেকেই ছুটি নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে । আমি আর বাড়িতে যাচ্ছি না । 
ভাতিজা আর ভাতিজি বার বার বাড়িতে যেতে বলছে । ওদের সাথে এবার পুজা করতে পারব না,সে জন্য খারাপ লাগছে । বাড়িতে থাকলে ওরা আনন্দ পেতো । আমার সাথে ছোট্ট ভাতিজিটা ঘুরতে পারতো । কাকু বাইরে থাকে । ওরা আশা করে থাকে পুজার সময় কাকু বাড়িতে আসবে ,কাকুর সাথে ঘুরতে পারব । এবার তাদের সেই আশা পুরন হবে না । ছোট ছোট মনে আমি এবার আনন্দ দিতে পারছি না,সে জন্য মনটা বড়ই খারাপ । 
পুজায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার মজাটাই আলাদা । সাড়া দিন বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর পর রাতে নিমোজ খানায় আড্ডা না দিলে দিনটা যেন অসম্পূর্ণই থেকে যায় । সেই আড্ডা এবার মিস করব । মাঝে মাঝে বাড়ির বাইরেও থাকতে হয় । সব সময় বাড়িতে থাকলে বাড়ির প্রতি যে টান তা বোঝা যায় না । বাইরে না গেলে বা না থাকলে বাইরের বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা যায় না । ছোট বেলা থেকেই তো বাড়িতে পুুজা করি । দু’এক বার বাড়ির বাইরে থেকে পুজা করেছি । এবছর আবারো শ্রীপুরে থাকব পুজায় । এর আগে জয়দেব পুরেও ছিলাম । সেখানে অবশ্য পুজায় ভালই আনন্দ হয় । 
পুজা শুরু হয়েছে । চারিদিকে পুজার আমেজ শুরু হয়ে গেছে । আমি পুজার খবর নিই ফেসবুকের মাধ্যমে । ফেসবুকেই দেখি কে কোথায় ঘুরছে । কে কি কিনছে । ঠাকুরের ছবিও দেখি সোস্যাল মিডিয়ায় । 
আজকাল সোস্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ঘরে বসেই অনেক কিছুই দেখতে পাওয়া যায় । লোকজন সোস্যাল মিডিয়ার কল্যাণে সব সময় আপডেট দিতে থাকে । কেউ কেই তো আবার সেলিব্রেটি হয়ে গেছে । কেউ কেউ স্ট্যাটাস আর স্ট্যাটাস দিতে দিতে ফেস বুক,টুইটারের পাতা ভরিয়ে ফেলে । কেউ আবার লাইভে গিয়ে নানা রকম রংঢং করে । আজ এসবের কারণে দুনিয়াটা অনেক ছোট হয়ে গেছে । আগে মানুষ একটা চিঠির জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকতো । একটা চিঠি হাতে আসতে আসতে কয়েক দিন,কয়েক সপ্তাহ বা মাস পেড়িয়ে যেত । আর এখন নিমিষেই সব কিছুর খবরাখবর এমন কি ভিডিও কলের মাধ্যমে কথা বলা যায় ।



 

এখন আর আগের মত কাছের লোকদের আড়ালে রাখা যায় না । দুরত্ব যতই হোক না কেন যেন আমরা কাছেই রয়েছি । আজকাল আর দুরত্বকে দুর মনে হয় না । বিজ্ঞানের কল্যাণে এখন আমরা কত উন্নত । 
পুজা শুরু হয়েছে । সবাই যেন পুজায় প্রিয়জনদের সাথে ভাল ভাবে কাটাতে পারে এটাই  প্রার্থণা করি । মানুষ জন যেন সবাইকে নিয়ে আনন্দ করতে পারে,সবার সাথে সুন্দর সময় কাটাতে পারে  এ শুভ কামনা রইলো সবার প্রতি । 













Post a Comment

0 Comments