Ticker

6/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

হরিবল, হরিবল—ভক্তি না ভণ্ডামি?

হরিবল, হরিবল—ভক্তি না ভণ্ডামি?
বর্তমান সমাজে এমন অনেক সনাতনী হিন্দু দেখা যায়, যারা দিনভর “হরিবল, হরিবল” বলে বেড়ান, জপমালা গলায় ঝুলিয়ে সর্বত্র ধর্মীয় ভাব প্রকাশ করেন। তাঁরা মাছ-মাংস স্পর্শ করেন না, উপবাস রাখেন, নিয়মিত মন্দিরে যান। কিন্তু প্রশ্ন হলো—এই সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান পালন করলেই কি প্রকৃত ধর্মানুসারী হওয়া যায়?

ধর্মের মূল চেতনা শুধু বাহ্যিক নিয়মে নয়, হৃদয়ের ভেতরের সত্যনিষ্ঠা ও মানবিকতার মধ্যে লুকিয়ে আছে। যারা মুখে “হরিবল” জপ করেন কিন্তু অন্যের কষ্টে কর্ণপাত করেন না, অসহায়কে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন না, বা সমাজে সাম্য ও সৎচরিত্র প্রতিষ্ঠার জন্য কিছুই করেন না—তাঁদের ধর্মবোধ কেবল বাহ্যিক প্রদর্শন।

গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, “যে ভক্ত প্রেম ও ন্যায়ের পথে চলে, সেই আমার প্রিয়”। অথচ আজ অনেকেই ভক্তির নামে ভণ্ডামি করে নিজেদের ‘ধর্মপ্রাণ’ প্রমাণ করতে চান। ধর্ম কেবল উপবাস, দান, নামজপ বা নিরামিষ আহারে সীমাবদ্ধ নয়—ধর্ম মানে সততা, মানবতা, সহানুভূতি, ও নিজের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করা।

যে মানুষ সমাজে ভালো কাজ করে, সত্য কথা বলে, অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসে—সে যদি “হরিবল” না বলেও মানবতার ধর্ম পালন করে, তবে সে প্রকৃত ভক্ত। আর যে শুধু মুখে নাম জপ করে, কিন্তু অন্তরে অহংকার ও ভেদবুদ্ধি পোষণ করে, সে ভক্ত নয়—সে ভণ্ড।

অতএব, আমাদের ভাবতে হবে—আমরা কি সত্যিই ধর্ম পালন করছি, নাকি ধর্মের নামে নিজেদের অহংকার ও উদাসীনতাকে আড়াল করছি? ধর্মের প্রকৃত অর্থ হলো “ধারণ করা”—সৎ, ন্যায় ও প্রেমকে ধারণ করা। তাই আসুন, মুখে নয়, কাজে প্রমাণ করি—আমরাই প্রকৃত সনাতনী, যাঁরা হরিনামের সঙ্গে সঙ্গে মানবতার গানও গাই।

Post a Comment

0 Comments